মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
মোঃ মাইন উদ্দিন : ইদানিং শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। আরো প্রচণ্ড গরম। এ দুই সমস্যায় বেশিরভাগ সময় বাড়িতে শুয়ে-বসেই কাটছে আমার দিন। যে কারণে কোথায় কি ঘটছে না ঘটছে খুব একটা জানতে পারিনা। কিন্তু লেখালেখির অভ্যাস যেহেতু আছে সেহেতু না লিখেও পারিনা। সে হিসেবে পহেলা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস নিয়ে লিখতে বসেছিলাম। লিখার ফাঁকে ফেসবুকে ঢুকতেই একটি ভিডিও চোখে পড়লো- কুলিয়ারচরে মাদক ব্যবসায়ীর চুরিকাঘাতে পুলিশ আহত! ভিডিও দেখে আমি তো অবাক! পুলিশের উপর চুরি চালালো মাদক ব্যবসায়ী! মাদকাসক্তরা দা, চুরি, লাঠি ও হাত-পা চালাতে শুনেছি মা, বাবা, ভাই, বোন, স্ত্রী, সন্তান, প্রতিবেশি ও রাজনৈতিক সহকর্মীর উপর কিন্তু পুলিশের উপর মাদক কারবারির চুরিকাঘাত এর আগে আর শুনি নি। এই ঘটনাটি আমাকে খুব বেশি ভাবাচ্ছে। আরো ভাবাচ্ছে এ কারণে, যেখানে মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে পুলিশ সেখানে পুলিশকে আতংকিত করার চেষ্টা করছে মাদক ব্যবসায়ী! আর এ ভিডিওটি দেখার পর থেকেই আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে, তদের খুঁটির জোর কি? এবং এতো সাহস তারা পায় কোথায়? আমি মনে করি পুলিশকেই এখন তাদের খুঁটির জোর খোঁজে বেড় করা উচিৎ। কারণ মাদকের সঙ্গে যারা জড়িত তারা কিন্তু কখনও কারোর আপন হতে পারে না, তারা দেশের শত্রু, সমাজের শত্রু, আপনার আমার সবার শত্রু। এখন সময় তাদেরকে সায়েস্তা করার। যার আস-পাশে মাদকসেবী, মাদক করবারি বিচরণ করে, চামচারা চামচামি করে তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ গ্রহণ করার। তা না হলে মাদক কারবারি আর মাদকসেবীরা এক সময় আপনার আমার মাথায় উঠে চড়ে বসবে, এমনকি ছুরিকাঘাত করতেও দ্বিধাগ্রস্ত হবে না। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, মাদকের সাথে সংস্পৃক্তরা কিন্তু ভালো না, তারা হয়ত আপনার আমার সামনে হুজুর হুজুর করে মুখে ফেনা তুলে নিজেকে নিরাপদে রেখে তাদের মাদক সামরাজ্য টিকিয়ে রাখার জন্য। তারা আসলেই কেউ না বরং পরিবারের শত্রু, সমাজের শত্রু, দেশের শত্রু। এই বিষয়টি আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, বে-খেয়ালি হলে উপায় নেই। কারোর হুজুর হুজুর দেখে মোমের মতো গলে গেলে চলবে না, মাদকসেবি, মাদক কারবারি, দালাল-বাটপার ও চামচাদের হুজুর হজুরে মোমের মতো গলে গিয়ে বহু নামি-দামি রাজা বাদশা ও জমিদারদের সর্বনাশ হয়েছে। সেসব ইতিহাস আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। আরেকটু সমনে আগালে বলতে হয় শুধু মাদকের সাথে সংস্পৃক্তরা নয়, সমাজের টাউট, বাটপারসহ অন্যান্য অপরাধীরাও রাজনীতিবিদ, সমাজপতি, শিল্পপতি ও প্রভাবশালীদের দ্বারে কাছে গিয়ে ঘিট ঘিট করে। আর এদের কারণে সমাজের ভালো মানুষের স্থান হয় পিছনে। শুধু তাই নয়, মাঝে মধ্যে মাদকবিরোধী বিট পুলিশিং সভাতেও মাদকের সাথে সংস্পৃক্ত ব্যক্তি সামনের সারিতে গিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। ফলে সমাজের ভালো মানুষগুলো পড়তে হয় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। এই হচ্ছে এদের অবস্থা। কিন্তু আপনি আমি কখনও ভাবিনা যে, এসব টাউট বাটপার আর চামচারা কখন কাকে পঁচিয়ে ফেলে। তবে এ ব্যাপারে আমি মনে করি দেশ, জাতি ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে অবশ্যই চামচা এবং টাউট- বাটপারদেরকে আমাদের এড়িয়ে চলা দরকার। আর মরণ নেশা মাদকের বিরুদ্ধে গড়ে তোলার দরকার সামাজিক আন্দোলন। এই আন্দোলনে মাদকের সাথে সংস্পৃক্ত মুখোশধারীদের মুখোশও উন্মোচন করা উচিৎ। তবেই সম্ভব হবে মাদকমুক্ত সোনার বাংলা গড়া।
লেখক: সংবাদকর্মী
একুশে টাইস্